বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ : Animalia
পর্ব : Chordata
শ্রেণী : Actinopterygii
বর্গ : Clupeiformes
পরিবার : Clupeidae
গন : Tenualosa
প্রজাতি : T. ilisha
ইলিশের জীবনচক্র
ইলিশের বৈজ্ঞানিক নাম ‘টেনুওয়ালোসা ইলিশা’। ইংরেজিতে বলে ‘হিলশা’। হেরিং, সার্ডিন মাছের মতোই ক্লাপিউডা মত্স্য পরিবারের সদস্য এরা।
গভীর সমুদ্রে বসবাস করলেও নদী আর মোহনায়ও দেখা মেলে পরিযায়ী ইলিশের। দেশের মোট উত্পাদিত মাছের ৩০ শতাংশই ইলিশ আর মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ২ শতাংশ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত এ মাছ ধরার সঙ্গে।
অতীতে শুধু মোহনা থেকে ইলিশ ধরার ওপর কড়াকড়ি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও বতর্মানে নদী ও সমুদ্র থেকে বড় পরিসরে ইলিশ আহরণকে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে।
ইলিশের জীবন ইতিহাস
পুরুষ ইলিশ থেকে আকারে বড় হয় মেয়ে ইলিশ। পুরুষ ইলিশ যেখানে আকারে ৩৫ থেকে ৪০ সেন্টিমিটারের মতো হয়ে থাকে, সেখানে ৪৬ সেন্টিমিটারের নিচে পরিণত কোনো মেয়ে ইলিশের খোঁজ মেলে না। কোনো কোনো মেয়ে ইলিশ আকারে ৫৫ সেন্টিমিটারও হয়ে থাকে। জন্মের এক বছরের মধ্যেই পরিণত হয় এ মাছ। বিশেষ করে প্রথম বছরের শেষ কিংবা দ্বিতীয় বছরের প্রথম দিকে পূর্ণ পরিপক্বতা লাভ করে রুপালি ইলিশ।
১৯৮৭ সালে তৈরি একটি গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়, আকারে ২৬-২৯ সেন্টিমিটার হওয়ার পরই পুরুষ ইলিশ তার প্রথম পরিপক্বতা লাভ করে আর মেয়ে ইলিশ তাদের প্রথম পরিণত বয়সে পৌঁছে ৩১-৩৩ সেন্টিমিটার আকার হওয়ার পর।
বলা যায়, বছরজুড়েই ডিম ছাড়ে ইলিশ। তবে তাদের প্রধান প্রজনন মৌসুম অক্টোবর-নভেম্বর। সম্পূরক সময়ের মধ্যে রয়েছে জুন-জুলাই ও ফেব্রুয়ারি-মার্চ। এ দুটি ঋতুকে বলা হয় গ্রীষ্মকালীন প্রজনন সময় আর আগেরটি স্বীকৃত ইলিশের শীতকালীন প্রজনন মৌসুম হিসেবে।
গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ভূমি অভিমুখে মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হতে শুরু হওয়ার সময়টা মূলত ইলিশের মূল প্রজনন মৌসুম। সে সময় ডিম ছাড়ার জন্য সমুদ্র থেকে মোহনা আর বড় নদীতে পাড়ি জমায় ইলিশের দল। ডিম ছাড়ার জন্য জুতসই জায়গা না পাওয়া পর্যন্ত পরিণত মেয়ে ইলিশ তাদের চলা থামায় না। নদীতে পছন্দসই স্থানে ডিম ছেড়ে আবার তাদের চলা শুরু হয় সমুদ্র অভিমুখে। সমুদ্র থেকে যে ইলিশ আসে, তার বেশির ভাগেরই প্রজনন ভূমি হিসেবে প্রাধান্য পায় মেঘনা ও এর শাখা নদীগুলো।
গবেষকদেরর মতে, প্রজনন উপলক্ষে ইলিশের যে ঝাঁকগুলো আসে, তার মধ্যে কিছু অংশ ডিম ছাড়ার পর আর সাগরে ফেরে না। পাকাপাকিভাবে নদীতেই থেকে যায়। ইলিশের প্রজননশক্তি নির্ভর করে এর শরীরের আকার ও ওজনের ওপর। ২৫ থেকে ৫৫ সেন্টিমিটার আকারের একটি ইলিশ আনুপাতিক হারে দশমিক ১ থেকে ২ মিলিয়ন ডিম ছাড়তে সক্ষম। একটি মেয়ে ইলিশের পূর্ণ পরিপক্ব ডিম্বাশয়ের ব্যাস সাধারণত দশমিক ৭ থেকে দশমিক ৯ মিলিমিটার।
এক পরিসংখ্যানে বলা হয়, ডিসেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত মেঘনা আর পদ্মা নদীতে খোঁজ পাওয়া যায় জাটকার। আকারে ৪ থেকে ১৬ সেন্টিমিটারের হলেই খাদ্য অনুসন্ধান আর পরিণত হতে এ জাটকা নদী থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়, পাড়ি দেয় সমুদ্রের দিকে।
ইলিশ মাছ মূলত প্লাংকটনভোজী। পানির উপরিভাগে প্রাপ্ত ভাসমান খাদ্যকণা তাদের প্রধান খাবার। খাদ্যতালিকায় আরো রয়েছে চিংড়ি, কাঁকড়া, ছোট শামুকসহ সবুজ-নীল শৈবাল ও জৈব বর্জ্য।
ধন্যবাদ।
ReplyDelete😊
Deleteuseful...
ReplyDelete